সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৩:২৯ অপরাহ্ন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অদৃশ্য প্রতিপক্ষ ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে। তারাই বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। সম্মিলিতভাবে এ ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। গতকাল বুধবার রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুরের নেতাদের সঙ্গে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির ভার্চুয়াল বক্তব্যে এ আহ্বান জানান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
তারেক রহমান বলেন, জুলুম করে বিএনপি জুলুমকারীদের অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে চায় না। তারা যা করেছে আমরা তা করতে চাই না। তিনি বলেন, ৩১ দফা বাস্তবায়নই হবে সব জুলম নির্যাতনের প্রতিশোধ।
বিএনপির শীর্ষনেতা বলেন, দেশ গঠনের জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করাই এখন বিএনপির প্রধান কাজ।
বিকালে নীলফামারী শিল্পকলা অডিটোরিয়ামে কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, উদ্যোক্তা তৈরির জন্য বিএনপি যুবকদের পাশে থাকবে এবং উদ্যোক্তাদের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হবে। এর ফলে দেশের চাহিদা যেমন মিটবে, তেমনি আন্তর্জাতিকভাবেও বাংলাদেশ সুনাম অর্জন করবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির আয়োজনে এ কর্মশালায় ৫০০ জন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
এর আগে সকালে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হিরা, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
রংপুরের কর্মশালায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বিএনপির ওপর জনগণ আস্থা রাখে। তারা মনে করে দেশ ও মানুষের জন্য কিছু করা সম্ভব হলে তা বিএনপিই করতে পারবে। তাই আমি বলছি, জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। বিএনপির ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের প্রতিশোধ হবে ৩১ দফা বাস্তবায়ন। আমার ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে, আমার মায়ের ওপর অত্যাচার হয়েছে, আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এসবের প্রতিশোধ নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে। সন্ধ্যায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, আপনারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। রাজপথে মিছিল, মিটিং, সংগ্রাম করেছেন। এবার জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে দেশ গঠনের জন্য। আজ থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিটি কর্মী এই ৩১ দফার বার্তা চারদিকে ছড়িয়ে দেবেন।
তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতাকে ধরে রাখতে নানা ট্যাগ দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করে রাখার চেষ্টা করেছিল। জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে চেষ্টা করতে হবে মতপার্থক্য কমিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে। কারণ জাতি বিভাজিত হলে দেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। আমরা ধর্ম বিবেচনা করব না, বাংলাদেশি হিসেবে বিবেচনা করব এবং সব ধর্মের মানুষের সম্প্রীতির দেশ গড়ে তুলব। মানুষের কর্মসংস্থান নিয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রায় ৩ কোটি নারী-পুরুষ বেকার রয়েছে। এত মানুষকে বেকার রেখে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভাব হবে না। তাই কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র বাড়াতে হবে। সেটি সরকারি, বেসরকারি যে কোনোভাবেই হতে পারে। বিশেষ কোনো প্রকল্পে কর্মসংস্থান তৈরি, উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে হতে পারে। তারেক রহমান বলেন, সমাজের অনেক গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি রয়েছেন, যারা দেশের জন্য কাজ করতে চান। কিন্তু তারা রেগুলার রাজনীতিতে নেই। এমন শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে সমাজের উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ দেবে বিএনপি।
রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর সভাপতিত্বে কর্মশালায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। এতে প্রশিক্ষণ দেন বিএনপি মিডিয়া সেলের প্রধান অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আবদুল্লাহ আল মামুন। কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, সহআন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন ও নাটোর জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল, জেলা আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, মহানগর সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ-উন নবী ডন প্রমুখ।