শনিবার, ২১ Jun ২০২৫, ০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন
বেলা পৌনে এগারোটার দিকে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞে্ এ আদেশ হতে পারে।
এ রিটের ওপর মঙ্গলবার দুই দফা শুনানি শেষে আদেশের জন্য বুধবার সাড়ে ১২টার সময় নির্ধারণ করা হয়।
বুধবার আদেশের আগে রিট খারিজের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আইনজীবী কায়সার কামাল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন।
মঙ্গলবার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় থেকে কয়েকটি ‘ভুল’ আদালতে তুলে ধরে রুল জারির আর্জি জানান আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। আর আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামালের মতে, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে বিবাদী পক্ষ সংক্ষুব্ধ হলে নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে পারে।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ডিএসসিসি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র। পরদিন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তাপস।
সেই নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে সোয়া চার লাখ ভোট পেয়েছিলেন তাপস।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। এরপর ডিএসসিসির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান মিয়া।
এর মধ্যে গত ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম। ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত। এ রায় পাওয়ার পর ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে, গেজেট প্রকাশের দিন ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করতে আইনি নোটিশ দেন রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামে দুই ব্যক্তি। নোটিশে গেজেট প্রকাশ এবং ইশরাককে শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।
তখন ওই দুই ব্যক্তির আইনজীবী বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে দ্রুত রায়টি দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করেছিলাম, ইসি এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করবে। চ্যালেঞ্জ করল না। আবার খবরে দেখলাম, আইন উপদেষ্টা বলছিলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের যে মতামত চাওয়া হয়েছিল, সেজন্য অপেক্ষা না করে এই নোটিফিকেশন জারি করে দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল এমন কোনো আদেশ দিতে পারেন না যে আদেশের কোনো কার্যকারিতা নেই। এখানে টার্ম শেষ হয়ে গেছে। অধ্যাদেশের মাধ্যমে মেয়র পদশূন্য করে দেওয়া হয়েছে।
পরে হাইকোর্টে রিট করেন মামুনুর রশিদ। রিটে ২৭ মার্চের রায় এবং ২৭ এপ্রিলের গেজেট কেন বেআইনি হবে না এবং ইশরাক হোসেনের শপথ পরিচালনা থেকে বিরত রাখার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় রায় ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে।
এদিকে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে নগর ভবন ব্লকেড কর্মসূচিতে নেমেছেন তার সমর্থকরা। গত কয়েকদিন ধরে এ নিয়ে তারা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। বুধবার থেকে মৎস্যভবন, কাকরাইল ও যমুনার সামনের রাস্তায় অবস্থান করে বিক্ষোভ করছে ইশরাকের সমর্থকরা।