শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১২:১২ অপরাহ্ন

বিদ্যুৎ গিলে খাচ্ছে অবৈধ অটোরিকশা

বগুড়া জেলায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিদ্যুৎখেকো প্রায় দেড় লাখ অবৈধ অটোরিকশা ও ইজিবাইক। এসব অবৈধ যানবাহন চার্জার ব্যাটারির মাধ্যমে পরিচালিত হয় বলে প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুৎ একটি খাতেই ব্যবহার হচ্ছে। গরমে বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও অটোরিকশা ও ইজিবাইক খেয়ে ফেলছে বিদ্যুতের বড় একটি অংশ। ফলে বিদ্যুৎ অপচয়সহ লোডশেডিংয়ে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

এদিকে অটোরিকশার বেপরোয়া গতির কারণে মাঝে-মধ্যেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে অনেকেই। কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ইজিবাইক ও অটোরিকশা আমদানিকারকরা। শহরের অলিতে-গলিতে শো-রুম দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে এসব অবৈধ যান। আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙুল দেখিয়ে দিনের পর দিন বেড়েই চলছে অটোরিকশার সংখ্যা

এতে শুধু বিদ্যুৎ অপচয় নয়, প্রতিনিয়ত সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। 

নেসকোর কর্মকর্তারা বলছেন, বগুড়া শহরে পাঁচটি ডিভিশন রয়েছে। এর আওতায় বিভিন্ন এলাকায় ৬০৮টি ইজিবাইক চার্জ দেওয়ার জন্য গ্যারেজ রয়েছে। এ ছাড়া বগুড়ায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৮৬ মেগাওয়াট।

যার পুরোটাই সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে কোনো লোডশেডিং নেই। 

জানা যায়, বগুড়া জেলায় প্রায় দেড় লাখ অটোরিকশা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। শহর ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি রিকশা গ্যারেজেই নিষিদ্ধ এসব অটোরিকশা ও ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জ করা হয়। অধিকাংশই ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ।

এ সংযোগগুলো একেবারে অনিরাপদ। অনিরাপদ থেকেই অটোরিকশার চার্জ দিতে গিয়ে ঘটেছে অসংখ্য দুর্ঘটনা। বগুড়া শহরের ধুনট, সদরের মালতীনগর, দুপচাঁচিয়া এলাকায় দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে। অর্থের বিনিময়ে বিদ্যুৎ বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এসব অবৈধ সংযোগ দিয়ে থাকেন। ফলে বিদ্যুতের ঘাটতি বেড়েই চলছে। যেখানে জনগণের সাধারণ চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ এর ওপর বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে তিন চাকার ইজিবাইক ও অটোরিকশা। বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘরে ঘরে অটোচার্জারের জন্য চার্জার ঘর রয়েছে। যেখানে ব্যাটারিগুলো চার্জ দেওয়া হয়। ফলে বিদ্যুৎ অপচয়সহ লোডশেডিংয়ে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বগুড়া নেসকো সূত্র জানায়, বগুড়া শহরে নেসকোর পাঁচটি ইউনিট রয়েছে। পাঁচটি মিলিয়ে ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৮৬ মেগাওয়াট। জেলা শহরে প্রতিদিন ৮৫ থেকে ৯০ মেঘাওয়াট চাহিদা হয়। এখন কিছুটা গরম কম থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা চলছে ৮৬ মেগাওয়াট। কিন্তু গরম বেশি হলে চাহিদা সৃষ্টি হয় ৯০ মেগাওয়াটেরও বেশি। এই চাহিদা পূরণ না হলেই লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হয়। চলতি এপ্রিলজুড়ে পুরো চাহিদা পাওয়া গেছে। ফলে লোডশেডিং নেই।

 

এদিকে অটোরিকশার ব্যাটারি দিনে ৬ ঘণ্টা চার্জ দিতে হয়। ৬ ঘণ্টায় ২ থেকে ৪ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। আর ১ হাজার ইউনিটে এক মেগাওয়াট। সে হিসেবে দিনে প্রায় ৫ থেকে সাড়ে ৫ মেগাওয়াট খরচ হয়ে যাচ্ছে ইজিবাইকের পেছনে। দিনদিন অটোরিকশার সংখ্যা বাড়ছে। আবহাওয়া ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এর সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদাও বাড়ছে।

নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই পিএলসি বগুড়া সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বগুড়া শহরে পাঁচটি ডিভিশন রয়েছে। এর আওতায় বিভিন্ন এলাকায় ৬০৮টি ইজিবাইক চার্জ দেওয়ার জন্য গ্যারেজ রয়েছে। পাঁচটি ডিভিশন মিলিলে ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৮৬ মেগাওয়াট। সরবরাহ করা হয়েছে ৮৬ মেগাওয়াট। বগুড়াতে বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024