বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন

প্রবাসী শ্রমিকদের বড় সুসংবাদ দিলো সৌদি আরব

সৌদি আরব শিল্প খাতে কর্মরত প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য বড় স্বস্তির খবর দিয়েছে। শিল্প লাইসেন্সের আওতায় পরিচালিত শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর আরোপিত ফি (আকামা) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। খবর সৌদি গেজেটের।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন বিষয়ক কাউন্সিলের (CEDA) সুপারিশের ভিত্তিতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সৌদি সরকার জানিয়েছে, জাতীয় কারখানাগুলোকে শক্তিশালী করা, তাদের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সৌদি ভিশন ২০৩০ অনুযায়ী জাতীয় অর্থনীতিকে বহুমুখীকরণের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হিসেবে শিল্প খাতকে বিবেচনা করা হচ্ছে।

দেশটির শিল্প ও খনিজ সম্পদমন্ত্রী বন্দর আলখোরাইফ বলেন, শিল্প শ্রমিকদের জন্য প্রবাসী ফি প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত সৌদি আরবের টেকসই শিল্প উন্নয়নকে আরও গতিশীল করবে। তিনি এ সিদ্ধান্তের জন্য দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম বাদশাহ সালমান ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আলখোরাইফ জানান, ১ অক্টোবর ২০১৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ছাড়ের সময়ে সরকার শিল্প খাতের ওপর আর্থিক চাপ বহন করেছে, যা খাতটির গুণগত উন্নয়ন ও শিল্প ভিত্তি সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত সৌদি শিল্প খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এই সময়ে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৮,৮২২ থেকে বেড়ে ১২,০০০ ছাড়িয়েছে। মোট শিল্প বিনিয়োগ ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৯০৮ বিলিয়ন রিয়াল থেকে ১.২২ ট্রিলিয়ন রিয়ালে পৌঁছেছে। তেল-বহির্ভূত রপ্তানি ১৬ শতাংশ বেড়ে ১৮৭ বিলিয়ন রিয়াল থেকে ২১৭ বিলিয়ন রিয়ালে উন্নীত হয়েছে।

এ ছাড়া শিল্প খাতে কর্মসংস্থান ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৮৮ হাজার থেকে ৮৪৭ হাজারে দাঁড়িয়েছে। সৌদিকরণের হার ২৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩১ শতাংশ হয়েছে। শিল্প খাতের জিডিপি ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩২২ বিলিয়ন রিয়াল থেকে ৫০১ বিলিয়ন রিয়ালের বেশি হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রবাসী ফি প্রত্যাহারের ফলে কারখানাগুলোর পরিচালন ব্যয় কমবে, উৎপাদন ও সম্প্রসারণ সহজ হবে এবং অটোমেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি ব্যবহারে গতি আসবে। এর ফলে সৌদি শিল্প খাতের দক্ষতা ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা আরও শক্তিশালী হবে।

আগামী দিনগুলোতেও শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধিতে সরকারের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে জানান আলখোরাইফ। তিনি বলেন, বেসরকারি খাতকে ক্ষমতায়ন, বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনের পরিবেশ সৃষ্টি এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণের মাধ্যমে সৌদি আরব ২০৩৫ সালের মধ্যে শিল্প জিডিপি তিনগুণ বাড়িয়ে ৮৯৫ বিলিয়ন রিয়ালে উন্নীত করার লক্ষ্য অর্জনের পথে এগোবে।

এই সিদ্ধান্তকে সৌদি আরবে কর্মরত ও আগ্রহী প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি বড় সুসংবাদ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved Meherpur Sangbad © 2025