সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০২:৩৭ অপরাহ্ন
কাশ্মীরের পাহলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বেড়ে চলা উত্তেজনার জেরে পাকিস্তান ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে এয়ার ইন্ডিয়া এক বছরে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ব্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে বলে জানিয়েছে এবং এই ক্ষতির জন্য কেন্দ্রের কাছে অর্থনৈতিক সহায়তা চেয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। খবর টিআরটি গ্লোবালের।
গত ২৭ এপ্রিল ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়কে পাঠানো এক চিঠিতে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ থাকলে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ, দীর্ঘতর যাত্রার সময় ও অতিরিক্ত ক্রু ব্যবস্থার কারণে তাদের বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ ৫৯১ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘প্রভাবিত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর জন্য একটি ভর্তুকি ব্যবস্থা হলো গ্রহণযোগ্য, যাচাইযোগ্য এবং ন্যায্য বিকল্প। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এটি প্রত্যাহার করা যেতে পারে।’
এই চিঠি পাঠানোর আগে কেন্দ্র সরকার এয়ার ইন্ডিয়াকে আকাশপথ বন্ধের কারণে সৃষ্ট প্রভাব মূল্যায়নের নির্দেশ দেয়। জানা গেছে, সংস্থাটি সরকারকে অনুরোধ করেছে যাতে ক্ষতি মোকাবেলায় চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কিছু নতুন ওভারফ্লাইট রুট নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং দীর্ঘতর রুটে অতিরিক্ত পাইলট নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি ট্যাক্স ছাড় ও জ্বালানির ওপর কিছু ছাড় দেওয়ারও অনুরোধ করা হয়েছে।
টাটা গোষ্ঠী মালিকানাধীন এই এয়ারলাইন বর্তমানে বহু বিলিয়ন ডলারের পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সংস্থাটি ৫২০ মিলিয়ন ডলার লোকসানের মুখে পড়েছে, যেখানে তাদের মোট বিক্রি ছিল ৪.৬ বিলিয়ন ডলার। ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দীর্ঘপথের ফ্লাইট পরিচালনা করে এমন এয়ার ইন্ডিয়া পাকিস্তান আকাশসীমা ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু পাকিস্তানের আকাশপথ বন্ধ থাকায় দীর্ঘপথে বিকল্প রুট ব্যবহার করতে হচ্ছে, যা খরচ ও সময় দুই-ই বাড়াচ্ছে।
২০১৯ সালেও পাকিস্তান প্রায় পাঁচ মাস ভারতের জন্য আকাশপথ বন্ধ রেখেছিল যার ফলে এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগোসহ অন্যান্য সংস্থার সম্মিলিত ক্ষতি হয়েছিল অন্তত ৬৪ মিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে, ভারতও পাকিস্তানের জন্য আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে, তবে ইসলামাবাদের আর্থিক ক্ষতির পরিসংখ্যান এখনো প্রকাশিত হয়নি। বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের বড় রকমের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নেটওয়ার্ক থাকায় এর প্রভাব দেশীয় এয়ারলাইনে বেশি পড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে এয়ার ইন্ডিয়া সরকারের কাছে দ্রুত অর্থনৈতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে যাতে তারা আন্তর্জাতিক ফ্লাইট কার্যক্রম সচল রাখতে পারে এবং যাত্রীদের জন্য স্বাভাবিক পরিষেবা বজায় রাখতে সক্ষম হয়।