সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০২:২২ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
মেহেরপুর জেলা কর্ণধার কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে মেহেরপুরে পাঁচ দফা দাবিতে ইসলামীক ফাউন্ডেশনের শিক্ষকদের মানববন্ধন মেহেরপুরে কাল বৈশাখীর হানা,  ফসলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি কৃষি ও প্রবাসী আয়ই বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড – মনির হায়দার এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’র আত্মপ্রকাশ বিপ্লবের পর আশাবাদের বাংলাদেশে বড় ধরনের পরিবর্তন নেই ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ: পাকিস্তানের প্রশংসা করে যা বলল চীন আকাশে খুলে গেল চাকা, যাত্রী নিয়ে শাহজালালে নিরাপদে অবতরণ বিমানের মসজিদ-মাদরাসাসহ ৩৫০ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গুঁড়িয়ে দিলো ভারত যৌক্তিক দাবি মেনে নিলে ২ মিনিটে ক্যাম্পাসে ফিরবো: শিক্ষক সমিতির সম্পাদক

পাকিস্তানের সাথে পানি চুক্তি বাতিল করছে ভারত?

কাশ্মীরে অস্ত্রধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত। নয়া দিল্লির দাবি এই হামলার পুরো পরিকল্পনা হয়েছে পাকিস্তান থেকে। যদিও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।

তবে হামলার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এরই মধ্যে পাকিস্তানের সাথে করা সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত।

সাময়িক ভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি ‘স্থগিত’ রাখার কথা ঘোষণা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

 

কিন্তু পাহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় আদতে পাকিস্তানের সঙ্গে সাড়ে ছয় দশকের পুরনো সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি (আইডব্লিউটি) থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তুতি ভারত শুরু করেছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই। আর তা সত্যি হলে তার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে।

আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় টানা নয় বছর আলোচনার পরে ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সই হয়েছিল ভারত-পাক সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি।

ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট জেনারেল আয়ুব খান চুক্তিটি করেছিলেন। বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় সই হওয়া ওই দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু এবং তার দুই উপনদী, বিতস্তা (ঝিলম) ও চন্দ্রভাগার (চেনাব) জলের উপরে পাকিস্তানের অধিকার ও কর্তৃত্ব থাকবে। ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকবে তিন উপনদী— বিপাশা (বিয়াস), শতদ্রু (সাটলেজ়) এবং ইরাবতী (রাভি)-র পানি। সামগ্রিকভাবে সিন্ধু এবং তার উপনদীগুলির মোট পানির উপর পাকিস্তানের অধিকার ৮০ শতাংশ।
ভারতের মাত্র ২০ শতাংশ! 

চুক্তির শর্ত বলছে ভারত বা পাকিস্তান নিজেদের প্রয়োজনে ওই পানি ব্যবহার করলেও কোনও অবস্থাতেই পানি প্রবাহ আটকে রাখতে পারবে না। কিন্তু কিষেণগঙ্গা এবং রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে ভারত পানি আটকে দিচ্ছে বলে ২০১৬ সালে অভিযোগ করে পাকিস্তান। প্রাথমিক ভাবে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে নিরপেক্ষ দেশের পর্যবেক্ষকের দাবি তুলেছিল ইসলামাবাদ। ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তির অ্যানেক্সচার এফ-এর ৭ নম্বর অনুচ্ছেদ মেনে ‘নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ’ নিয়োগের প্রস্তাব মেনেও নেয়। কিন্তু এর পরেই একতরফা ভাবে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ইসলামাবাদ।

 

কিন্তু আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত ‘নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকে’র হাতেই বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিল। ঘটনাচক্রে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে নয়াদিল্লির অবস্থানে সায় দিয়েই ‘নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক’ জানান, পাকিস্তানের প্রাপ্য পানি আটকাতে নয়, ভারত নিজেদের প্রয়োজনেই কিষেণগঙ্গা এবং রাতলে প্রকল্প নির্মাণ করেছে। ‘নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক’ গোষ্ঠীর পর্যবেক্ষণপর্বের মাঝেই গত বছরের অগস্টে ইসলামাবাদকে সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তির পুনর্মূল্যায়ন নিয়ে চিঠি দিয়েছিল নয়াদিল্লি। যার পরেই তৈরি হয় জল্পনা।

‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ সীমান্ত-সংঘাতের প্রভাব চুক্তির উপর পড়তে চলেছে বলে সেই চিঠিতেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিল মোদি সরকার। পাহেলগাঁওকাণ্ড সেই ‘বৃত্ত সম্পূর্ণ করতে পারে’ বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে ইতোমধ্যেই। ভারত শেষ পর্যন্ত চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে গেলে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে সেচ প্রকল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যার প্রত্যক্ষ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কৃষিতে। সে ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সঙ্কটে বিপর্যস্ত পাকিস্তানের ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হতে পারে। কারণ, সিন্ধু ও তার উপনদীগুলির জলের উপরেই পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ কৃষি নির্ভরশীল!

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সিন্ধু চুক্তির পুনর্মূল্যায়ণের জন্য প্রথম বার পাকিস্তানকে নোটিস পাঠিয়েছিল নয়াদিল্লি। সেখানে মূলত ১৯৬০ সালের পরে দুই দেশের বিপুল জনসংখ্যা বৃদ্ধির যুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইসলামাবাদ সে বার কোনও সাড়া দেয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024