শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১২:৪৭ অপরাহ্ন

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ গোয়েন্দা প্রধানের

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, নেতানিয়াহু তাকে বরখাস্ত করার চেষ্টা করেছেন, কারণ তিনি তার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় অবৈধ আদেশ মানতে রাজি হননি।

রোনেন বার দাবি করেন, আদালত ওই বরখাস্তের আদেশ আপাতত স্থগিত করেছেন এবং বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এরই মধ্যে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভে নেমেছে সাধারণ মানুষ।

তাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী দেশের গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছেন।

 

অন্যদিকে, নেতানিয়াহু পাল্টা অভিযোগ এনে বলেন, ‘রোনেন বার বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, আর এই বিশ্বাসভঙ্গই ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলা ও ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধে পরিণত হয়। ’

তবে রোনেন বার সুপ্রিম কোর্টে জানান, বরখাস্তের বিষয়টি নেতানিয়াহু পরিকল্পনা করেন ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে। তিনি আরও বলেন, নেতানিয়াহু বারবার শিন বেতকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং প্রতিবাদে অর্থায়নকারীদের উপর নজরদারি চালানো হয়।

আরও বিস্ফোরক অভিযোগে তিনি বলেন, একটি নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনুরোধপত্রে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছিল, যা নেতানিয়াহুকে দুর্নীতির মামলায় বিচার এড়াতে সাহায্য করতে পারত। ওই মামলায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ, প্রতারণা ও জনগণের বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ আরও আছে যে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার আগেই ইসরায়েলকে সতর্ক করা হয়েছিল, কিন্তু সেই হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করা হয়। এতে ওই দিনই নিহত হয় ১,১০০ এর বেশি ইসরায়েলি, আর বন্দি করা হয় প্রায় ২৫০ জনকে, যাদের মধ্যে ৫০ জনের বেশি এখনও গাজায় আটক রয়েছে।

শিন বেত সেই হামলার পেছনের ব্যর্থতা এবং হুঁশিয়ারি উপেক্ষার বিষয়েও তদন্ত চালিয়ে আসছে। 

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে রোনেন বারের সব বক্তব্য ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে দাবি করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য, বরখাস্তের পেছনে কোনো তদন্ত বন্ধ করার উদ্দেশ্য ছিল না।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে ৫১ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। রোনেন বারকে বরখাস্তের উদ্যোগ এবং বন্দি মুক্তি প্রক্রিয়ায় নেতানিয়াহুর ব্যর্থতা ইসরায়েলের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গভীর সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024