মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫০ অপরাহ্ন
প্রিয় পৌরবাসী,
আসসালামু আলাইকুম। গভীর উদ্বেগ ও বিচলিত হয়ে আপনাদের অবগত করতে আজকের খোলা চিঠি। একজন সাধারণ পৌর নাগরিক হিসেবে আমি মনে করেছি এটা আমার দ্বায়িত্ব। শহরের কলেজ মোড়ের পোষ্ট অফিস ও তুলা ভবনের ঠিক সামনে রাতারাতি কিছু দোকান ঘর নির্মাণ হয়েছে। আইনবহির্ভূত এই নির্মাণ কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন শহরের ০১ ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহা. মহাব্বত আলী। তিনি নির্মাণাধীন জমিটি নিজের পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করে দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করেন। ততকালীন জেলা জজ আব্দুল হাই মহোদয় উক্ত সম্পত্তিটি পৌরসভার মর্মে রায় প্রদান করেন। জনাব মহব্বত আলী রায়ে অসন্তুষ্ট হয়ে আপিল করেন। বর্তমানে এখনো আদালতে মামলা চলমান।
আদালত থেকে নিষ্পত্তি না হওয়ার পরও মহব্বত আলী পৌরসভার কাছে দ্বিতীয় তলা মার্কেট নির্মানের অনুমতি চেয়েছিলেন। সাবেক মেয়র রিটন অনুমতি দিয়েছেন আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এবং অনুমতি দিয়ে তিনি পৌরবাসীকে অর্মযাদা অসম্মানিত করেছেন। আদালত থেকে নিষ্পত্তি না হওয়ার পরেও তিনি পৌর সম্পত্তি ব্যক্তি স্বার্থে ভূয়া মালিক সাঁজা মহব্বত আলীকে মার্কেট নির্মান করতে দিলেন। পৌর বাসীর প্রতি নুন্যতম সম্মান, দায়িত্ববোধ কিন্বা জবাবদিহিতার প্রশ্ন থাকলে আজ মহব্বত ‘র মত মানুষ পৌরবাসীর সম্পত্তি জুলুম করতে সাহস পেত না। আইনের শাসন থাকলেও আইনকে মুঠোবন্দি করে রাখা মানুষ গুলো যখন সাধারণ নাগরিক ‘র সেবক সাজেন তখন এমন সব ঘটনা দৃশ্যমান হওয়াটা খুব স্বাভাবিক।
সরজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘরগুলো নির্মাণে বেশি সময় ব্যায় হয়েছে ছুটির দিন এবং রাতে। দিনের আলোতে মানুষের চোখ ফাঁকি দিয়ে তৈরি হওয়া ঘরগুলো নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও পৌরসভার প্রতি নিন্দা থাকলেও উক্ত ঘর নির্মাণে মেয়র ‘র ভূমিকা এবং মোহাব্বত আলীর তার ঘনিষ্ঠ জন হওয়ায় প্রকাশ্যে থাকায় মুখ বন্ধ রাখতে হয়েছে তাদের। দেশের পট পরিবর্তনের পর অনেককেই এখন প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করছে। এবং জনমুখে দাবি উত্থাপিত হচ্ছে নির্মাণধীন ঘর ভাঙ্গতে অনশন কর্মসূচি প্রয়োজনে পৌরসভা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবেন।
আমরা অনুসন্ধানে যানতে পারি- ১৩’ফুট প্রসস্থ জমিতে সামনে ৫’ফুট এবং বাকি তিন দিকে ৩’ফুট করে বাদ দিয়ে ঘর নির্মাণের অনুমতি দেয় পৌরসভা। মহাব্বত আলী সাবেক মেয়র ‘র দাপটে চারদিকে মাত্র ৬” ইঞ্চি যায়গা বাদ দিয়ে ঘর নির্মান চলমান রাখেন। পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগের পর থেকে শক্ত অবস্থানে যায় পৌরসভা আইন বহির্ভূত হওয়া নির্মাণাধীন ঘরগুলো ভেঙে ফেলতে মৌখিক ও লিখিত চিঠির মাধ্যমে মহাব্বত আলীকে অবগত করে আসছেন। এমনি পৌরসভার আইন উপদেষ্টা লিখিত ভাবে জানিয়েছেন নির্মাণকৃত মার্কেট পৌর কতৃপক্ষ ভেঙ্গে দিলে আইনগত কোনো বাঁধা থাকবে না। তবুও নির্মাণকৃত মার্কেট কেনো ভেঙ্গা হচ্ছে না তা আমাদের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি করছে।
আমরা সুস্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই- এই চিঠি প্রাপ্তির দশ দিন অতিবাহিত হলে আমরা শতশত পৌরবাসীকে সাথে নিয়ে পৌর সম্পত্তি রক্ষায় আমরণ অনশণ কর্মসূচি পালন করবো।
আমরা জানি বর্তমান প্রশাসক একজন দায়িত্বশীল, সৎ এবং নাগরিক সেবায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রতিনিয়ত নাগরিকদের নানামুখী সমস্যার সমাধান করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। আমরা সাধারণ নাগরিক হিসেবে সম্মানিত প্রশাসক মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই- কোনো বিশেষ ব্যক্তির প্রভাবে আপনি এই সম্পত্তি কাউকে কুক্ষিগত করতে দিবেন না। আদালত থেকে সম্পূর্ণ নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই সম্পদ পৌরবাসীর আর পৌরবাসীর আমানত রক্ষায় আপনার সাথে সর্বদা আমরা আছি। আপনি বর্তমানে আমাদের অভিভাবক আপনি সদয় দৃষ্টি দিলে পৌরবাসী অবশ্যই আপনার প্রতি আজন্ম কৃতজ্ঞ থাকবে। শহরের বুকে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে আপনার নাম।
গণমাধ্যমে যুক্ত থাকা সকলকে অনুরোধ করবো কলেজ মোড়ের নির্মানকৃত মার্কেট নিয়ে আপনারা লিখুন। আমার কথায় বিশ্বাস না করে সঠিক তদন্ত করুন। আপনারা জাতির বিবেক আপনাদের কলমের শক্তি অনেক বেশি। আমি লিখে কতদূর যেতে পারবো জানি না। তবে আমি বিশ্বাস করি আপনাদের লেখা শহরে ছুঁয়ে দেশ ছুঁয়ে পৃথিবীর ঘরে ঘরে পৌঁছাতে সময় লাগবে না। আপনাদের প্রতিও অকুন্ঠ আবেদন পৌরবাসীর সাথে হওয়া এই অন্যায়ের প্রতিবাদে যুক্ত হবেন।
হে আগামী প্রজন্ম- আজ পৌরসভার যে সম্পত্তি দখলের পথে তা তোমাদের। তোমাদের অধিকার ফিরে নিতে কথা বলো, প্রতিবাদ জানাও। তোমাদের সম্মিলিত ঐক্যতা কখনো পরাজয় হবে না, হবে না, হবে না।
সম্মানিত প্রশাসক আপনার কাছে আমাদের চাওয়ার শেষ নেই। অনেকটা নিজের আপন মানুষের কাছে মানুষ যেমন প্রতি মুহূর্তে আবদার করে ঠিক তেমনই আপনি আমাদের কাছেও আপন মানুষ, কাছের মানুষ। তাই আপনার কাছে কলেজ মোড় বাসীর চাওয়া মেহেরপুর- কুষ্টিয়া ফোরালেন রাস্তার কাজ প্রায় সমাপ্তি। আশা করবো, নির্মানকৃত মার্কেটটি ভেঙ্গে ওয়াপদা মোড়ের ন্যায় কলেজ মোড়ের সৌন্দর্যের আবরণে প্রস্ফুটিত করে তুলবেন।
ইনশাআল্লাহ বিজয় পৌরবাসীর হবেই হবে।
আহবাণে-
মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু
সাবেক মেয়র
মেহেরপুর পৌরসভা।