শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১২:৪৫ অপরাহ্ন

‘ফ্যাসিবাদের মোটিফ’ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগে থানায় জিডি

Screenshot

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ অনুষদ কর্তৃপক্ষের। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার ভোর আনুমানিক ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে চারুকলা অনুষদের দক্ষিণ পার্শ্বের গেট সংলগ্ন জায়গায় স্থাপিত প্যান্ডেলের ভিতরে ‘কে বা কারা’ ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতিতে ‘আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে’ বলে এক বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়।

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ কর্তৃক পহেলা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপনের লক্ষ্যে আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের চেষ্টায় বিভিন্ন ধরনের প্রতিকী মোটিফের সঙ্গে প্রতীকী দানবীয় ফ্যাসিস্টের মোটিফ তৈরি করা হয়।

ওই ঘটনা অনুসন্ধানের লক্ষ্যে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি ও  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

শনিবার সকালে চারুকলা অনুষদে সরেজমিনে দেখা যায়, অনুষদের যেখানে মোটিফ তৈরির কাজ চলছিল, সেখানে ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’  মোটিফটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফটিও আংশিক পুড়ে গেছে।

বিষয়টির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল বলেন, ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিকে টার্গেট করে আগুন লাগানো হয়েছে।

ওই আকৃতি পুরোটাই পুড়ে গেছে। একইসঙ্গে পায়রার অবয়বটাও পুড়ে গেছে। 

তিনি আরও বলেন, আগুনটা ফজরের নামাজের সময় লাগানো হয়েছে। আমরা এরপরই খবর পাই।

কিন্তু ফায়ারসার্ভিস আসতে আসতে ওটা পুরোটাই পুড়ে যায়। আগুনটা ইচ্ছে করেই লাগানো হয়েছে। তবে কে বা কারা করেছে তা জানা যায়নি। ঘটনার পরপরই সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, পুলিশের কর্মকর্তারা এসে উপস্থিত হন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা হচ্ছে কীভাবে এ ঘটনা ঘটল।
 

এ ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তবে তদন্ত হওয়ার আগে কিছু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, সেখানে সিসিটিভি রয়েছে। তবে আমরা এখনও ফুটেজ দেখতে পারিনি। দেখলে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারব। আমরা শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান জরুরি সভা ডেকেছেন। সেখানে আলোচনা করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

উল্লেখ্য, ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারের প্রধান মোটিফ ছিল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’। ২০ ফুট উচ্চতার রাক্ষসীর ন্যায় আকৃতিটি জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাকৃতি বলেই পরিচিতি পেয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষার্থী ও নেটিজেনদের কাছে। এটি বানানোর সময় ‘নষ্ট করে দেওয়া হতে পারে’ বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। প্রশাসনের বাড়তি সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন তারা।

 

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024