সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৩:০৪ অপরাহ্ন
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। গণমাধ্যম গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা না গেলে গণতন্ত্রও টিকবে না। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে মিডিয়ার মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।
সেজন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়নি। সে কারণেই শেখ হাসিনা জনরোষে পতিত হয়েছিলেন। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০২৫ উপলক্ষে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক তথ্যউপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন অনাকাক্সিক্ষতভাবেই দেরি হচ্ছে। এ সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা উচিত। তাহলেই আমরা বলতে পারব জুলাই-পরবর্তী যে গণমাধ্যম আমরা চেয়েছিলাম, তা দৃশ্যমান হচ্ছে।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ওপার থেকে শেখ হাসিনা প্রতিদিন বিবৃতি দেন। আবার আজকাল গ্রুপ বৈঠক করেন। মানে অনলাইনে গ্রুপে গ্রুপে ডাকেন এবং তাদের নির্দেশনা দেন। এরকম চলতে দেওয়া কি ভালো হচ্ছে? আমার কাছে মনে হয় না। আবার এরকম মুক্ত, অবাধ তথ্যের চর্চা বন্ধ করবেন সেটাও কি নীতির মধ্যে পড়ে?
তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে বিগত সরকারের সময় যেসব সাংবাদিকের নামে মামলা করা হয়েছিল, সে মামলাগুলো এখন পর্যন্ত আছে। ড. ইউনূসের মতো মানুষ এ মামলাগুলো তুলছেন না কেন?
জোনায়েদ সাকি বলেন, রাষ্ট্রের এমন কোনো আইন থাকা চলবে না, সরকার যাতে গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরতে পারে। যা যা আইন করেছে তার সবগুলো বাতিল করতে হবে।
মাহফুজ আনাম বলেন, আজকে আমাদের উপলব্ধি করতে হবে- আমরা গণমাধ্যম জনগণের সেবার কাজে নিয়োজিত। আমরা দেশপ্রেমিক, সমাজকে উন্নত করতে চাই, বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, মত প্রকাশে বিশ্বাস করি এবং আমাদের সব কাজ সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই। তবে এটা সত্য, আমাদের গণমাধ্যম মুক্ত না। শেখ হাসিনা রিজিম জনধিকৃত হয়েছিল তার অন্যতম কারণ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছিল না।
মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, যে দেশে প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকের চাকরি যায়, সেই দেশে মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করছি। জানি না আমি কাকে দায়ী করব। আমি কি সরকারকে দায়ী করব, না মালিককে দায়ী করব? আর সাংবাদিক ইউনিয়ন কী করেছে। আমাদের সম্পাদক পরিষদ, যেটাতে আমি প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে আছি। আমি মনে করি আমরাও ব্যর্থ হয়েছি। তবে এটা স্বীকার করতেই হবে যে, পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে অনেকখানি। এক বছর আগে যে অবস্থা ছিল, সেই অবস্থা এখন আর নেই। অনেকখানি পাল্টেছে। আমরা হতাশ হচ্ছি বেশ কিছু অ্যাকশনের কারণে। নূরুল কবীর বলেন, যখন সারা দুনিয়ায় প্রতি বছর একবার করে মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করতে হয়, তার মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হয় সারা পৃথিবীতে গণমাধ্যম নানা প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করে। হাসান হাফিজ বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে সাংবাদিকরা হয়রানির শিকার হয়েছেন। একই সঙ্গে গণমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করা হয়েছিল। আগামীতে যারা ক্ষমতায় থাকবেন তারা ফ্যাসিবাদী আচরণ থেকে গণমাধ্যমকে মুক্ত রাখবেন।