বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন
মেহেরপুর প্রতিনিধি :
আপন মায়ের পেটের ছোটো ভাই সরকারি কলেজ থেকে শিক্ষকতা করে অবসরে গেলেও বড় ভাই খোরশেদ আলীর শিক্ষকতার বয়স সিমা এখনো রয়েছে দুই বছর। অধ্যক্ষ খোরশেদ আলীর এই কারিশমায় হতভম্ব সুশীল সমাজ।
গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি জাফর আকবর ও দূর্ণীতিবাজ অধ্যক্ষ খোরশেদ আলীর পদত্যাগের দাবীতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তথ্য তুলে ধরেন কলেজের সিনিয়র শিক্ষক অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বেদারুল আলম।
স্থানীয় এলাকাবাসীর ব্যানারে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টার সময় মেহেরপুর- কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গাংনী উপজেলা পরিষদ গেটে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
সমাজ সেবক শাজাহান সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে কলেজের আরেক শিক্ষক, সহকারি অধ্যাপক সাজেদুর রহমান বুলু বলেন, এতদিন আমরা আয়না ঘরের পাশেই অবস্থান করেছি। অধ্যক্ষ খোরশেদ আলীর দূর্ণীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই আমাদের আয়না ঘরে নিয়ে শুরু হয় মানশিক নির্যাতন তার ছোট ভাইয়ের শিক্ষকতার বয়স শেষ হলেও তিনি বয়স বাড়িয়ে এখনো বহাল তবিয়তে চাকুরী করছেন।
এসময় গাংনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এন্ড কলেজের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান, গাংনী সুলেরী আলভী, ইনামুল হকসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, অধ্যক্ষ খোরশেদ আলীর বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকার দূর্ণীতি সরকারিভাবে প্রমানিত হলেও এই দূর্ণীতিবাজের বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তার বিরুদ্ধে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারি নিয়োগেও কয়েক কোটি টাকা লোপাটেরও অভিযোগ তোলেন বক্তারা।
আগামীতে কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল নিয়োগ করা হবে। এই নিয়োগকে কেন্দ্র একটা মোটা অংকের বাণিজ্য করতে উঠে পড়ে লেগেছে অধ্যক্ষ খোরশেদ আলী। ইতোমধ্যে কলেজের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের এডহক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর। বিষয়টি নিয়ে এলাকার সুশীল সমাজ ও স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের নেতৃবৃন্দ ফুঁসে উঠছেন। তারা গত রবিবার সকালের দিকে লোকজন কলেজ প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানান। এছাড়া বিএনপি নেতা জাফর আকবর ও অধ্যক্ষ খোরশেদ আলীর বিরুদ্ধেও নানা শ্লোগান দেন ও তার পদত্যাগ দাবী করেন।
গাংনী মহিলা কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি সরকারী টিন ও অর্থআত্মসাৎকারী ভুমিদুস্য সমাজে বিশৃংখলাকারী ও দূর্নীতিবাজ সভাপতি জাফর আকবর ও নিয়োগে বানিজ্যকারী অধ্যক্ষ খোরশেদ আলীর পদত্যাগই পারে মহিলা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এবং গাংনী মহিলা কলেজের দূর্নীতবাজ অধ্যক্ষ খোরশেদ আলীর পদত্যাগ চাই সহ নানা প্লেকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অংশ নেয়।
বক্তারা বলেন,২০০৮ সালে অধ্যক্ষ খোরশেদ আলী ১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে যা তদন্তে প্রমানিত হয়। এবং অধ্যক্ষ খোরশেদ আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রনালয়ে সুপারিশ করা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এছাড়া সার্টিফিকেট,জন্মতারিখ সহ বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ বানিজ্য’র অভিযোগ তুলে নানা বক্তব্য দেন বিক্ষুদ্ধ এলাকবাসি ও মহিলা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষকবৃন্দ।
তারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী মহিলা ডিগ্রি কলেজের ম্যানেজিং সভাপতি করার জন্য এলাকার সর্বজন শ্রদ্ধেয়, গ্রহণযোগ্য ও শিক্ষিত ব্যাক্তির নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু দূর্ণীতিবাজ অধ্যক্ষ খোরশেদ আলী ও কলেজের কয়েকজন শিক্ষক সেই দাবিকে পাঁশ কাটিয়ে এলাকার বিতর্কিত ব্যক্তি জাফর আকবরকে গভর্নিং বডির এডহক কমিটির গঠনের লক্ষ্যে বিএনপি নেতা জাফর আকবরকে সভাপতি নিয়োগ দেওয়ার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর সুপারিশ পাঠান। বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর পরই ফুঁসে ওঠে স্থানীয়রা। পরে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসি গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রতিকার দাবি করে সাক্ষাত করেন।