শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৪৪ পূর্বাহ্ন
রাজধানীর জিগাতলায় ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি নারী হোস্টেল থেকে এনসিপির নেত্রী জান্নাতারা রুমীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এটা আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড সে প্রশ্নটি উঠেছে সবার আগে। তবে প্রশ্ন জোরালোভাবে ওঠার আরও কারণ হলো- কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অ্যাক্টিভিস্টের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ও পেইজ থেকে জান্নাতারা রুমীকে নিয়ে সাইবার বুলিং করা হচ্ছিল। দেওয়া হচ্ছিল হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি। এমনকি তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্যও অনলাইনে ছড়িয়ে দেয় পতিত আওয়ামী লীগের অ্যাক্টিভিস্টরা।
এ নিয়ে নিরাপত্তা চেয়ে এক মাস আগে ধানমন্ডি থানায় একটি জিডি করেন রুমী। চরম নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে গত ১৩ নভেম্বর রাতে এ জিডি করেন তিনি। ওই জিডিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় আনার কারণে রুমীকে টার্গেট করা হচ্ছে।
এনসিপির এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জিডি করার পরও তাকে হুমকি দেওয়া বন্ধ হয়নি এবং পুলিশ থেকে কোনো কার্যকর সহায়তা পাওয়া যায়নি। এতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। একপর্যায়ে তিনি মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরও পরামর্শ নিচ্ছিলেন।
দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব জানান, প্রায় দুই মাস ধরে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন রুমী। তিনি হত্যা ও ধর্ষণের হুমকিও পেয়ে আসছিলেন। এসব কারণে গত কিছুদিন ধরে ট্রমাটাইজড্ ছিলেন। দলের কর্মসূচিতে আসলেও বিমর্ষ থাকতেন রুমী। সব মিলিয়ে তিনি এক ধরনের হতাশা ও বিষণ্নতায় ভুগছিলেন বলে জানান রুমীর স্বজন ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা।
এ ছাড়া পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় যে অপমৃত্যু মমলা দায়ের করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, রুমীর দুবার বিয়ে হয়, দুই সংসারই ভেঙে গেছে। দুই ঘরে তার দুটি সন্তান আছে। তারা বাবাদের কাছেই থাকে। সে কারণে তিনি বিষণ্নতায় ভুগছিলেন। এ বিষয়ে তিনি চিকিৎসাও নিচ্ছিলেন।
হাজারীবাগ থানার ওসি মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, এনসিপির নেত্রী জান্নাতারা রুমীর মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। সেই মামলায় বিষণ্নতার কথা উল্লেখ করেছে পরিবার।