সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০৫ অপরাহ্ন

২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেজিস্ট্রারের অপসারণ চায় রাকসু

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু)। সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় রাকসুর নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগে চলমান অচলাবস্থা আজ ২৩ দিন অতিক্রম করেছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকট নিরসনে রাকসুর প্রতিনিধিদল একাধিকবার মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকীব মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দ্রুত সমাধানের অনুরোধ জানায়।

উপাচার্য বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে গত বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অপসারণের নির্দেশে স্বাক্ষর করেন এবং ফাইলটি রেজিস্ট্রার দপ্তরে প্রেরণ করেন। প্রশাসনিক নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একই দিনে চিঠি ইস্যু হওয়ার কথা থাকলেও রবিবার দুপুর পর্যন্ত তা ইস্যু করা হয়নি। এতে বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থেকে শিক্ষার্থীরা আরও একদিন একাডেমিক ক্ষতির মুখে পড়ে।

বিষয়টি জানতে রাকসুর সাধারণ সম্পাদক ও সিনেট সদস্য সালাহউদ্দিন আম্মার রেজিস্ট্রার দপ্তরে গেলে দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, রেজিস্ট্রার মহোদয় তখন রাজনৈতিক প্রোগ্রামে ব্যস্ত আছেন এবং পরে আসতে বলেছেন। রাকসুর মতে, প্রশাসনিক দায়িত্বের সময় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা যেমন নীতিগতভাবে অনুচিত, তেমনি এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশাসন ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

পরে রেজিস্ট্রার ইফতেখার আলম মাসউদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে বিষয়টির অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং উত্তেজিত হয়ে কথা বলেন। এই ঘটনার একটি অংশ ভিডিওতে ধারণ করা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে বহু শিক্ষার্থী দেখেছেন বলে জানায় রাকসু। শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সংকটকে উপেক্ষা করে প্রশাসনিক পদক্ষেপ বিলম্বিত করা দায়িত্বহীনতা ও জবাবদিহিতার অভাবের দৃষ্টান্ত। একজন নির্বাচিত ছাত্র-প্রতিনিধির সঙ্গে এমন আচরণ রাকসুর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছে এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নীতিমালার পরিপন্থী। রাকসুর দাবি ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টারের এই অশোভন আচরণের জন্য তদন্তের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার অপসারণ করতে হবে।”

এ সময় রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাউদ্দীন আম্মার বলেন, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ২৩ দিন ধরে ক্লাস না পেয়ে রাকসুর কাছে অভিযোগ করেছেন। এই বিষয়টি নিয়ে গতকাল দুপুর ২টার দিকে রেজিস্ট্রার দপ্তরে গেলে রেজিস্ট্রারের সচিব জানান, সেখানে মহানগর বিএনপির একটি রাজনৈতিক মিটিং চলছে। প্রশাসনিক দপ্তরে রাজনৈতিক কার্যক্রম চলা অত্যন্ত অনৈতিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার পরিপন্থী। যে কর্মকর্তা বা শিক্ষক নিজের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব ভুলে রাজনৈতিক প্রোগ্রামে যুক্ত হন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবিলম্বে অপসারণ করা উচিত।

রাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ঘটনা যেহেতু রেজিস্ট্রারের সাথে সম্পৃক্ত তাই আমরা রেজিস্ট্রারের অপসারণ চাই। আর এটি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ঠিক আছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির শিকার হয়। সামনে আমরা দাবি জানাবো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেন কর্মকর্তার পদে না থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাকসু প্রতিনিধির সাথে নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনের পরে বিমাতা সূলভ আচরণ করছে।

তিনি আরো বলেন, প্রথম থেকেই দেখবেন শপথ অনুষ্ঠান দিতে দেরি করা, প্রথম কার্যদিবস দিতে দেরি করা, সার্বিক বিষয়ে অন্যান্য ক্যাম্পাস থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু প্রতিনিধিদের সাথে বিমাতা সুলভ আচরণ করছে। কী কী কারণে তারা এগুলো করছে তা সবার সামনে চলে আসছে আর রাকসু ফান্ডের ৩৫ বছরের টাকার হিসাব দিতে পারবে না বলে আশঙ্কা করছে। তারা আমাদের সাথে এরূপ আচরণ করছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved Meherpur Sangbad © 2025