সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫২ অপরাহ্ন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৩৬ বছর পর। আগামী বুধবার ভোটগ্রহণ করা হবে ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীর জন্য ভর্তি পরীক্ষার মতো বৃত্ত পূরণ করবেন। আমরা চাই নির্বাচন নিয়ে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ব্যালট পেপার হবে মোট পাঁচ পৃষ্ঠার, এর মধ্যে চারটি কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য এবং একটি হল ও হোস্টেল সংসদের জন্য। সব ব্যালটে থাকবে প্রার্থীর নাম, পদবি, ব্যালট নম্বর ও একটি খালি বৃত্ত। ভোটগ্রহণ হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে, যেখানে মোট ৬১টি ভোটকক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে সর্বোচ্চ ৫০০ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। এবারের নির্বাচনে চাকসুর ২৬টি পদের জন্য ৪১৫ জন এবং হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য ৪৯৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন।
ভোটাররা চারটি কেন্দ্রীয় ব্যালট ও একটি হল বা হোস্টেল ব্যালট ব্যবহার করবেন। ব্যালটে প্রার্থীর নাম ও নম্বরের পাশে বৃত্ত পূরণ করতে হবে। একাধিক বৃত্ত পূরণ করলে ভোট বাতিল হবে। ব্যালটে থাকবে ২৪ অঙ্কের নিরাপত্তা কোড এবং একটি গোপন কোড, যা ওএমআর মেশিনে শনাক্ত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, একজন ভোটারকে সব ভোট দিতে আনুমানিক ১০ মিনিট সময় লাগবে। ভোটগ্রহণ হবে আগামী বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। ভোট শেষ হওয়ার সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তার কক্ষে গণনা শুরু হবে।
ভোটগ্রহণ ও গণনা পদ্ধতি
ভোটকক্ষে দায়িত্ব পালন করবেন একজন প্রিজাইডিং অফিসার, একজন শিক্ষক ও একজন কর্মকর্তা। তাদের সহায়তায় থাকবেন দুই কর্মচারী, একজন রোভার স্কাউট ও একজন বিএনসিসি সদস্য। সব প্রার্থী প্রতি কেন্দ্রে একজন করে পোলিং এজেন্ট রাখতে পারবেন।
ভোট শুরু হওয়ার আগে ব্যালট বাক্স উপস্থিত সবার সামনে খোলা হবে এবং খালি আছে কিনা যাচাই করা হবে। ভোট শেষে অব্যবহৃত ব্যালট সিলমোহরসহ ফেরত পাঠানো হবে। সব ব্যালট দুবার স্ক্যান করা হবে—প্রথমে ডিন অফিসে, পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি অফিসে। দুই ফলাফল মিললে সেটিই চূড়ান্ত ঘোষণা করা হবে। কোনো অমিল ধরা পড়লে পুনরায় স্ক্যান করে মিলিয়ে দেখা হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, ভোট দিতে কোনো সময়সীমা নেই; ভোটাররা পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ভোট দিতে পারবেন।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শাটল ট্রেন ও বিশ্ববিদ্যালয়গামী বাসের রুটে থাকবে কঠোর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশ সম্পূর্ণভাবে নিরাপত্তা বলয়ে ঘেরা থাকবে।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠে থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখা, পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস, রিজার্ভ ফোর্স, স্ট্রাইকিং ফোর্স, গোয়েন্দা সংস্থা, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট। প্রয়োজনে বিজিবি ও সেনাবাহিনীও সহায়তায় নামতে পারে। ভোটের লাইনে দাঁড়ানোর আগে ভোটারদের তিন ধাপে তল্লাশি করা হবে।
নির্বাচনের দিন পাঁচ ভবনে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, শিক্ষার্থীরা দায়িত্বশীল আচরণ করবে এবং কোনো পরিস্থিতিতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হবে না।