সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ১০:৫২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
মেহেরপুর জেলা কর্ণধার কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে মেহেরপুরে পাঁচ দফা দাবিতে ইসলামীক ফাউন্ডেশনের শিক্ষকদের মানববন্ধন মেহেরপুরে কাল বৈশাখীর হানা,  ফসলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি কৃষি ও প্রবাসী আয়ই বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড – মনির হায়দার এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’র আত্মপ্রকাশ বিপ্লবের পর আশাবাদের বাংলাদেশে বড় ধরনের পরিবর্তন নেই ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ: পাকিস্তানের প্রশংসা করে যা বলল চীন আকাশে খুলে গেল চাকা, যাত্রী নিয়ে শাহজালালে নিরাপদে অবতরণ বিমানের মসজিদ-মাদরাসাসহ ৩৫০ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গুঁড়িয়ে দিলো ভারত যৌক্তিক দাবি মেনে নিলে ২ মিনিটে ক্যাম্পাসে ফিরবো: শিক্ষক সমিতির সম্পাদক

দৃষ্টিহীনদের চলাফেরায় বিপ্লব আনবে চীনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

দৃষ্টিহীন ও স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষের চলাফেরার পথ সহজ করতে নতুন একটি পরিধানযোগ্য ডিভাইস তৈরি করেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিনির্ভর এই ডিভাইসটি আশপাশের প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে এবং চলার জন্য নিরাপদ পথের নির্দেশনা দেয়।

গবেষণাটি ‘নেচার মেশিন ইন্টেলিজেন্স’ জার্নালে প্রকাশিত হয়। গবেষকরা জানিয়েছেন, ডিভাইসটি ব্যবহারকারীদের শব্দ ও হালকা কম্পন এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিক দিকনির্দেশনা দিতে সক্ষম।

অচেনা পরিবেশে চলাফেরা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য অনেক সময়ই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনার কিছু পদ্ধতি থাকলেও তা সব সময় সহজলভ্য নয়। এর বিকল্প হিসেবে বাজারে থাকা অনেক ডিভাইসই ব্যবহার জটিলতার কারণে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

এই প্রেক্ষাপটে চীনের শাংহাই জিয়াও টং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লেইলেই গু ও তাঁর গবেষকদল সহজে ব্যবহারযোগ্য একটি পরিধানযোগ্য প্রযুক্তি তৈরি করেছেন।

এটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে চারপাশ পর্যবেক্ষণ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহারকারীকে নির্দেশনা দেয়। 

ডিভাইসটি ব্যবহারকারীর ভ্রুর মাঝখানে পরিধানযোগ্য এবং হালকা ও ছোট আকৃতির, ফলে দীর্ঘ সময় ব্যবহারে অস্বস্তি হয় না। এতে থাকা একটি ক্যামেরা আশপাশের ভিডিও ধারণ করে, যা তাৎক্ষণিকভাবে এআই অ্যালগরিদমে বিশ্লেষণ হয়ে সামনে থাকা বাধা শনাক্ত করে এবং নিরাপদ পথ নির্ধারণ করে।

পথ নির্দেশনার জন্য ডিভাইসটি দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করে।

প্রথমত, ‘বোন কন্ডাকশন’ হেডফোনের মাধ্যমে শব্দ তরঙ্গ সরাসরি কানের ভেতরে পৌঁছে যায়, ফলে বাইরের শব্দও শোনা যায় এবং দিকনির্দেশনাও স্পষ্ট বোঝা যায়। দ্বিতীয়ত, হাতে পরিধানযোগ্য কৃত্রিম ত্বক (স্কিন) মৃদু কম্পনের মাধ্যমে কবজিতে সংকেত দেয়, যদি সামনে কোনো বাধা থাকে। 

কার্যকারিতা যাচাইয়ে গবেষকেরা রোবটিক সিমুলেশনের পাশাপাশি ২০ জন দৃষ্টিহীন ও স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন স্বেচ্ছাসেবকের ওপর বাস্তব পরীক্ষাও চালান। মাত্র ২০ মিনিট অনুশীলনের পর অধিকাংশ ব্যবহারকারী ডিভাইসটি দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করতে সক্ষম হন। তারা বাস্তব পরিবেশে চলাফেরা ছাড়াও বস্তু চিনে নেওয়া ও নিচ থেকে তুলেও নিতে পারেন।

 

সিস্টেমটি বর্তমানে বিছানা, চেয়ার, টেবিল, বেসিন, টেলিভিশন ও খাবারসহ মোট ২১টি বস্তু চিহ্নিত করতে সক্ষম। গবেষণায় বলা হয়, দৃষ্টি, শ্রবণ ও স্পর্শ—এই তিনটি ইন্দ্রিয়ের সমন্বয়ে প্রযুক্তি আরও কার্যকর হয় এবং ব্যবহারকারীদের কাছে স্বাভাবিক অভিজ্ঞতা দেয়।

গবেষকরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি শুধু চলাফেরার ক্ষেত্রেই নয়, দৃষ্টিহীন মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

তথ্যসূত্র: নোরিডজ ও ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024